সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ , ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সুনামগঞ্জ-৫ আসনে আলোচনায় বিএনপি’র দুই হেভিওয়েট প্রার্থী কৃষকরা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছেন : অতিরিক্ত কৃষি সচিব নদী ভাঙন রোধের দাবিতে ভাদেরটেক গ্রামবাসীর মানববন্ধন গ্যাসের পাইপ লাইনে লিকেজ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা জামালগঞ্জে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ ভক্তি আর সম্প্রীতিতে মুখরিত রথযাত্রা চাঁদা না দেয়ায় দুই ভাইকে ছুরিকাঘাত : একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক মাছ বাজারে প্রতারণার ফাঁদে ক্রেতারা বালুপাথর মহালের ইজারা বন্ধ নয়, ইজারা প্রথার বাতিল চাই ১১ মাসে অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, ৫ পর্যটককে কারাদন্ড মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালিত “মধ্যনগরে রাজহংস হাউজ বোট বিএনপি নেতার দখলে” শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ কাদাজলে নষ্ট ভাটির বন্দরের সুনাম সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার চোরাকারবারিদের কোনো ছাড় নয় : বিজিবি অধিনায়ক টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র : অবহেলায় ধ্বংসের পথে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদারবাজারে সুপেয় পানি ও শৌচাগার সংকট

পাগনার হাওরের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না, বোরো চাষে অনিশ্চয়তায় ৫০ গ্রামের কৃষক

  • আপলোড সময় : ২৫-০১-২০২৫ ১২:২৪:৪৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-০১-২০২৫ ১২:২৪:৪৬ অপরাহ্ন
পাগনার হাওরের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না, বোরো চাষে অনিশ্চয়তায় ৫০ গ্রামের কৃষক
শহীদনূর আহমেদ :: মাঘ মাসের এই সময়টাতে যেখানে হাওরে ধান গাছে সবুজের সমারোহ দেখার কথা, কিন্তু সেখানে ঢেউ খেলছে থৈ থৈ পানি। সময়মতো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতার কারণে বোরো চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ৫০ গ্রামের কৃষক। এই অবস্থা জামালগঞ্জ উপজেলার পাগনার হাওরের। পানি নিষ্কাশন খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার কবলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকরা। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও প্রতিকার না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় কয়েক হাজার কৃষক। জরুরি ভিত্তিতে হাওরের পানি নিষ্কাশন না করা হলে অনাবাদি থেকে যাবে এই হাওরের অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট হাওরপাড়ের কৃষকরা। সুনামগঞ্জ জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে অন্যতম পাগনার হাওর। পাগনার হাওরে ১৬ হাজার ১১৭ হেক্টর জমির মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ রয়েছে ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর। এই হাওরের ফসল ঘরে তুলতে পারলেই হাসি ফুটে দুর্গম এলাকার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের মুখে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই হাওরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ঠিকমতো বোরো চাষাবাদ করতে পারছেন কৃষকরা। চলতি বোরো মৌসুমেও জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পাগলার হাওরপাড়ের কৃষকরা জানিয়েছেন, হাওরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম দুইটি খাল হচ্ছে গজারিয়া ও ডালিয়া খাল। উজান থেকে আসা পলি মাটিতে খালের উৎসমুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় হাওরের পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। ফলে কৃষকের জমিতে পানি আটকে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যেখানে মওসুমের এই সময়টাতে ধানের চারার সবুজের সমারোহ দোল খাওয়ার কথা সেখানে হাওরে ঢেউ খেলছে জলাবদ্ধতার পানি। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ও ফেনারবাক ইউনিয়নের পাগনার হাওরপাড়ের ৫০ গ্রামের কৃষক। ফেনারবাঁক গ্রামের শাহ আলম নামের এক কৃষক বলেন, হাওরে আমার ৪০ কেয়ার জমি রয়েছে। জমিতে এখনো কোমরের নিচে পানি। পানি না কমায় চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। আমার মতো হাজারো কৃষক রয়েছেন যাঁরা এক কেয়ার জমিও রোপণ করতে পারেননি। চাষাবাদের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু হাওরে থেকে পানি সরছে না। গজারিয়া খাল খনন করে পানি নিষ্কাশনের জন্য চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়েছি কিন্ত কেউ আমাদের কথা আমলে নিচ্ছেন না। রইস উদ্দিন চৌধুরী নামের আরেক বুনিয়াদি কৃষক বলেন, এক ফসলি জমির উপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। ধান চাষ না করতে পারলে পরিবার-পরিজন চালানো কষ্ট হয়ে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে হাজার হাজার কৃষক তাদের জমি রোপণ করতে পারেনি। আমি নিজেও ভুক্তভোগী। জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনে জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজ হয়নি। এখন আমাদের ভরসা কেবল উপরওয়ালার প্রতি। হাওরের পানি নিষ্কাশনের জন্য গত অর্থ বছরে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে গজারিয়া খাল খননের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। অপরিকল্পিত খনন কাজ এবং লুটপাটের কারণে এই প্রকল্প সাফল্যের মুখ দেখেনি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কৃষক নেতা জুলফিকার চৌধুরী রানা বলেন, পাগনার হাওরের পানি নিষ্কাশন গজারিয়া ও ডালিয়া খাল দিয়ে হয়ে থাকে। গত বর্ষায় খালের স্লুইসগেইট খুলে পানি প্রবেশ করানো হয় হাওরে। এসময় উজানের পলি এসে খালের উৎসমুখ ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে এবার হাওরের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে খাল খননের দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খাল খননের নামে ভাউতাভাজি প্রকল্প দিয়ে অনিয়ম লুটপাট করে থাকেন। দ্রুত সময়ে খাল খনন করে হাওরের জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনের দাবি তার। হাওরের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমস্যা নিরসনে খাল খননের কথা জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনি বলেন, পাগনার হাওরের পানি নিষ্কাশন না হওয়ার একামাত্র কারণ খাল ভরাট হয়ে যাওয়া। আমরা বিগত সময়ে ছোট ছোট প্রকল্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু এটির কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি। জলাবদ্ধতার স্থায়ি সমাধানে বড় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে খনন কাজ করা জরুরি বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আবারও খাল খননের জন্য প্রকল্প গ্রহণে কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। আশা করছি প্রকল্পের অনুমোদন হলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমস্যার সমাধান হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স